মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা উন্মোচন করেছেন। প্রস্তাবটিতে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের কথা বলা হয়েছে। এই পরিকল্পনা ঘিরে ফিলিস্তিনসহ আরব বিশ্ব ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
ওয়েস্ট ব্যাংক-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (PA) ট্রাম্পের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এই প্রস্তাব মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করবে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর করবে এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দেবে।
তবে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (PIJ) এই পরিকল্পনাকে “অঞ্চল জ্বালিয়ে দেওয়ার ফর্মুলা” বলে অভিহিত করেছে।
মিশর, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, তুরকি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা গাজার পুনর্গঠন, ফিলিস্তিনিদের স্থানচ্যুতি রোধ, মানবিক সহায়তার নিশ্চয়তা এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দেন।
তুরকি প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, তিনি ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির জন্য কাজ চালিয়ে যাবেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক্স-এ পোস্টে পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, স্থায়ী শান্তি আঞ্চলিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।
ইসরায়েলের বিরোধী রাজনীতিক বেনি গ্যান্টজ ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করে বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বন্দিদের মুক্তি, হামাসের পতন এবং আঞ্চলিক স্বাভাবিকীকরণ সম্ভব হবে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ইসরায়েলকে এ পরিকল্পনায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত হতে হবে এবং হামাসকে অবশ্যই বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ করে পরিকল্পনা মেনে নিতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার একে “সাহসী ও বুদ্ধিদীপ্ত উদ্যোগ” বলেছেন।
ইতালি প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও পূর্ণ মানবিক সহায়তার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, এটি সহিংসতা থামানোর সুযোগ এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধানই স্থায়ী শান্তির একমাত্র পথ।
ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ফিলিস্তিন ও আরব দেশগুলোর কাছ থেকে সতর্ক আশাবাদী প্রতিক্রিয়া পেলেও, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলো কঠোর সমালোচনা করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো সাধারণভাবে পরিকল্পনাটিকে স্বাগত জানালেও বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব হবে তা এখনো অনিশ্চিত।