ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি: বাণিজ্যযুদ্ধ আবারও উত্তপ্ত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার একাধিক আমদানি পণ্যের উপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা তার বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলেছে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই শুল্ক কার্যকর হবে।
মূল সিদ্ধান্তগুলো:
ওষুধপত্র: যেকোনো ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্টকৃত ওষুধ আমদানিতে ১০০% শুল্ক। তবে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কারখানা স্থাপন করে, তবে তারা এ থেকে অব্যাহতি পেতে পারে।
ভারী ট্রাক: বিদেশে নির্মিত সব ভারী ট্রাকে ২৫% শুল্ক, যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা যেমন পিটারবিল্ট, কেনওয়ার্থ, ফ্রেইটলাইনার ও ম্যাক ট্রাককে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য।
গৃহ সংস্কার সামগ্রী: রান্নাঘরের ক্যাবিনেট, বাথরুম ভ্যানিটি ইত্যাদির উপর ৫০% শুল্ক।
আসবাবপত্র: গৃহসজ্জার সামগ্রী ও আসবাবপত্রে ৩০% শুল্ক।
তার প্রশাসন সকল দেশের উপর ১০ শতাংশ বেসলাইন শুল্ক আরোপ করেছে, তবে যেসব দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি আমদানির তুলনায় অনেক বেশি, সেসব দেশের ক্ষেত্রে আরও বেশি ব্যক্তিগতকৃত শুল্কহার প্রযোজ্য।
অর্থনৈতিক প্রভাব:
সুইডেনের ভলভো ও জার্মান ডেমলারের মতো ট্রাক নির্মাতাদের শেয়ারের দাম ইউরোপীয় বাজারে হঠাৎ পড়ে গেছে।
আমদানিকৃত আসবাবপত্রের উপর নির্ভরশীল মার্কিন খুচরা বিক্রেতা যেমন ওয়েফেয়ার ও উইলিয়ামস সোনোমা–এর শেয়ারের দামও নিচে নেমেছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি নতুন করে তীব্র হতে পারে।
রাজনৈতিক ও কৌশলগত দিক:
ট্রাম্প ‘জাতীয় নিরাপত্তা’কে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে ট্রাক আমদানির বিরুদ্ধে ধারা ২৩২ ব্যবহার করেছেন, যা প্রেসিডেন্টকে আমদানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের বিশেষ ক্ষমতা দেয়।
তিনি কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের উপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন, ফেন্টানাইল পাচার ও অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর অজুহাতে।
ট্রাম্পের নীতি আমদানি-নির্ভর মার্কিন অর্থনীতির প্রচলিত ধারা থেকে সরে গিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছে।
এই পদক্ষেপকে ট্রাম্প প্রশাসনের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আক্রমণাত্মক বাণিজ্য নীতি হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।