নাসার কাসিনি মহাকাশযানের সংগৃহীত তথ্যের নতুন বিশ্লেষণে শনির (Saturn) উপগ্রহ এনসেলাডাসে (Enceladus) নতুন ধরনের জৈব যৌগ (organic compounds) শনাক্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার উপগ্রহটিতে জীবনের জন্য অনুকূল পরিবেশ থাকতে পারে এমন ধারণাকে আরও জোরদার করছে। গবেষণাটি Nature Astronomy জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৮ সালে কাসিনি মহাকাশযান এনসেলাডাসের বরফগিজারের মধ্য দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় যে বরফকণা সংগ্রহ করেছিল, তাতে এই নতুন জৈব উপাদান পাওয়া গেছে।
আগে পাওয়া কিছু বরফকণায় জৈব অণু শনাক্ত হলেও, সেগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় মহাজাগতিক বিকিরণে পরিবর্তিত হতে পারে বলে সন্দেহ ছিল। এবার পাওয়া নতুন কণাগুলো ছিল অপেক্ষাকৃত “তাজা” এবং দ্রুতগতিতে মহাকাশযানের সেন্সরে আঘাত করায় রাসায়নিক গঠন আরও পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, বরফে ঢাকা এনসেলাডাসের নিচে একটি গভীর সমুদ্র রয়েছে, যার তলদেশে হাইড্রোথার্মাল ভেন্টস থাকতে পারে — পৃথিবীর সমুদ্রতলের মতোই, যেখানে তাপ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া জীবনের উদ্ভবের সহায়ক হতে পারে। এনসেলাডাসের আকার মাত্র ৫০০ কিলোমিটার, কিন্তু এর বরফাচ্ছাদিত পৃষ্ঠের নিচে বিশাল পানির ভান্ডার রয়েছে। এই সমুদ্র থেকেই বরফ ও পানির বাষ্প মহাশূন্যে বেরিয়ে আসে, যা কাসিনি সংগ্রহ করেছিল।
এখন বিজ্ঞানীরা নতুন মিশনের পরামর্শ দিচ্ছেন। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ESA) ভবিষ্যতে এনসেলাডাসে অবতরণের একটি পরিকল্পনা করছে, আর চীনও একই রকম মিশনের প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, নাসার Europa Clipper নামের মহাকাশযান বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপাতে জীবনের উপাদান খুঁজতে ২০৩০ সালে পৌঁছাবে।