রাশিয়া ঘোষণা করেছে যে তারা ইরানের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার ও সম্প্রসারণ করতে প্রস্তুত। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, মস্কো-তেহরান সম্পর্ক “নাটকীয়ভাবে” এবং ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হচ্ছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান একটি ২০ বছরের কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এতে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, বাণিজ্য এবং সংস্কৃতি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পাশ্চাত্যের নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা দুই দেশ নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী। ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন এবং ইরানের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর হয়েছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহন করিডোরকে (International North-South Transport Corridor) গুরুত্ব দিয়ে বহুপাক্ষিক সংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
গত অক্টোবর (২০২৫) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রোসাটম ইরানের সাথে চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি করে। এটি ইরানের জ্বালানি খাতে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিশ্চিত করবে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন ও ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করে রাশিয়া, যা তেহরানের প্রতি মস্কোর রাজনৈতিক সমর্থনের আরেকটি প্রমাণ। এছাড়া, বর্তমানে রাশিয়ায় ৯,৫০০-এর বেশি ইরানি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, যা সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা সহযোগিতাকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে।
গতকাল সোমবার মস্কো সফরকালে ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিনের সাথে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত চুক্তি বাস্তবায়ন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অগ্রগতি ও সাইবার নিরাপত্তায় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। ইরান ও রাশিয়া ভবিষ্যতে BRICS, Shanghai Cooperation Organization (SCO) এবং ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের মতো বহুপাক্ষিক ফোরামগুলোর মাধ্যমে সহযোগিতা আরও গভীর করতে চায়।



