রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা পুনরায় শুরু করে, তবে মস্কোও “পাল্টা ব্যবস্থা” নিতে বাধ্য হবে।
বুধবার ক্রেমলিনে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে পুতিন জানান, যুক্তরাষ্ট্র বা পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধ চুক্তি (CTBT)-এর অন্য কোনো স্বাক্ষরকারী দেশ যদি পরীক্ষা চালায়, তবে রাশিয়াও সমান পদক্ষেপ নেবে। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিষয়টি পর্যালোচনা করে সম্ভাব্য প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রস্তাব দিতে নির্দেশ দেন।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার পর থেকে রাশিয়া আর কোনো পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় দুই পরাশক্তির মধ্যে পারমাণবিক উত্তাপ আবারও তীব্র হয়েছে।
ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা দেন যে যুক্তরাষ্ট্র “অবিলম্বে” পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা পুনরায় শুরু করবে। এর পরপরই পুতিনের এই নির্দেশ আসে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ১৯৯২ সালের পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় চালুর সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ রাশিয়ার ওপর “গুরুতর সামরিক হুমকি” তৈরি করেছে এবং প্রয়োজনে নভায়া জেমলিয়ার পরীক্ষাকেন্দ্রে অল্প সময়ের মধ্যে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো সম্ভব।
তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রাশিয়া এখনই কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত অভিপ্রায় বোঝার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “আমরা এখন শুধু যাচাই করছি—প্রস্তুতি নেওয়া আদৌ প্রয়োজন কি না।”
একইভাবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, “ট্রাম্পের নির্দেশের পরিণতি অনিবার্য। রাশিয়াকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য পদক্ষেপ বিবেচনা করতেই হবে।”
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়া কেউ পারমাণবিক বিস্ফোরণমূলক পরীক্ষা চালায়, তবে তা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করবে এবং নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হতে পারে।
বর্তমানে রাশিয়ার কাছে প্রায় ৫,৪৫৯টি ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৫,৫৫০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। দুই দেশই এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত।



