স্পেন সফরে এক বিশেষ ‘শান্তি মিশনে’ অংশ নিয়েছে ফিলিস্তিনি জাতীয় ফুটবল দল। দলের কোচ এহাব আবু জাজার ও তার খেলোয়াড়রা বাস্ক ও কাতালান আঞ্চলিক দলের বিপক্ষে প্রতীকী প্রীতি ম্যাচ খেলছেন, যার লক্ষ্য হলো মানবিক সহায়তা এবং নিজ দেশের জনগণের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার জন্য সচেতনতা তৈরি করা।
শনিবার স্পেনের উত্তরাঞ্চলের বাস্ক দেশ অঞ্চলের বিখ্যাত সান মামেস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রায় ৫০,০০০ দর্শকের উপস্থিতি ছিল। এ ম্যাচ থেকে সংগৃহীত অর্থ যাবে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ডাক্তারস উইদাউট বর্ডারস (MSF)-এর তহবিলে।
দর্শকরা ফিলিস্তিন ও বাস্ক অঞ্চলের পতাকা হাতে স্টেডিয়ামে সমবেত হন এবং ম্যাচ শুরু আগে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় মিছিল করেন। স্পেনে গত এক বছরে ইসরায়েলের গাজা অভিযানের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা গেছে।
বাস্ক দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে অ্যাথলেটিক বিলবাও ও রিয়াল সোসিয়েদাদের ফুটবলাররা ছিলেন। তবে স্পেনের মূল জাতীয় দল বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচে ব্যস্ত থাকায় তাদের কেউ এই খেলায় অংশ নেননি।
মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি ফুটবলাররা বার্সেলোনায় কাতালোনিয়া অঞ্চলের নির্বাচিত খেলোয়াড়দের বিপক্ষে খেলবেন। দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড় কখনো গাজার মাটিতে খেলেননি। তারা কেউ কাতার, কেউ চিলি, কেউ আইসল্যান্ড বা যুক্তরাষ্ট্রে খেলেন।
গাজায় দুই বছরের ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে ফিলিস্তিনি ফুটবল ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি ফুটবল ফেডারেশন। কোনো লিগ নেই, ক্লাবগুলো ধ্বংস হয়েছে, এবং শত শত অ্যাথলেট নিহত বা আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আছেন দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদ, যাকে ‘ফিলিস্তিনি পেলে’ বলা হতো।
ফিলিস্তিনি ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি জিবরিল রাজুব জানান, “প্রথম থেকেই তারা ক্রীড়া অবকাঠামোকে টার্গেট করেছে। গাজায় ২৮৯টি ক্রীড়া স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে। ১,১০০ জন অ্যাথলেট, কর্মকর্তা ও কোচ নিহত হয়েছেন। হাজারো মানুষ আহত, অনেকেই এখনো নিখোঁজ।”
স্পেনের সরকার ইতোমধ্যেই গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে এবং একে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করেছে।
এই সফরের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি ফুটবলাররা বিশ্ববাসীর কাছে আবারও আবেদন জানাচ্ছেন—ন্যায়বিচার, শান্তি ও স্বাধীনতার নামে তাদের কণ্ঠস্বর যেন শোনা হয়।



