শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে ক্যামব্রিজশায়ারের হান্টিংডন রেলস্টেশনে এক ভয়াবহ ছুরিকাঘাতের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে নয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাটি ঘটেছে লন্ডন নর্থ ইস্টার্ন রেলওয়ে (LNER)-এর একটি ট্রেনে, যা ডনকাস্টার থেকে লন্ডন কিংস ক্রসের দিকে যাচ্ছিল।
ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশ জানিয়েছে, দুইজন সন্দেহভাজনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা বহুজনকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি এবং দুইজনকে হেফাজতে নিয়েছি। তদন্তে সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটও যুক্ত হয়েছে।”
ঘটনার পরপরই ট্রেনটি হান্টিংডন স্টেশনে থামিয়ে দেওয়া হয় এবং সশস্ত্র পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও তিনটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। কিছু প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ট্রেনটি পিটারবোরো ছাড়ার প্রায় দশ মিনিট পর হামলা শুরু হয়। যাত্রীরা আতঙ্কে জরুরি অ্যালার্ম বাজিয়ে সাহায্য চান, অনেকে বাথরুমে লুকিয়ে পড়েন, আবার কেউ কেউ পালাতে গিয়ে পদদলিত হন।
এক প্রত্যক্ষদর্শী The Times-কে জানান, “আমি দেখলাম একজন বড় ছুরি হাতে রয়েছে, চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে আছে। মানুষজন চিৎকার করছে, কেউ কেউ বলছিল ‘আমরা তোমাকে ভালোবাসি’—একেবারে বিভীষিকাময় দৃশ্য।”
পুলিশ সাময়িকভাবে “প্লেটো” কোড ঘোষণা করেছিল, যা সাধারণত “মারাউডিং টেরর অ্যাটাক” বা সন্ত্রাসী হামলার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যদিও পরে সেটি প্রত্যাহার করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার এক বিবৃতিতে বলেন, “এই ভয়াবহ ঘটনার জন্য আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আহতদের প্রতি আমার সহানুভূতি রইল এবং জরুরি সেবাকর্মীদের দ্রুত পদক্ষেপের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
হোম সেক্রেটারি শাবানা মাহমুদ জনগণকে ঘটনাটি নিয়ে “অকাল মন্তব্য ও অনুমান” না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, ক্যামব্রিজশায়ার ও পিটারবোরোর মেয়র পল ব্রিস্টো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “হান্টিংডন ট্রেনে ঘটে যাওয়া ভয়ংকর দৃশ্যের কথা শুনে আমি হতভম্ব। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে সমবেদনা জানাই।”
বর্তমানে পুরো পূর্বাঞ্চলীয় রেললাইন বন্ধ রাখা হয়েছে, এবং LNER যাত্রীদের ভ্রমণ না করার অনুরোধ জানিয়েছে। পুলিশ এখনও হামলার উদ্দেশ্য ও হামলাকারীদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি, তবে ঘটনাটি “বৃহৎ তদন্ত” হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।



