গাজা অভিমুখে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইসরায়েলি বাধা ও হুমকি সত্ত্বেও এগিয়ে চলেছে। ফ্রাঙ্কো-ফিলিস্তিনি ইউরোপীয় সংসদ সদস্য রিমা হাসান জানিয়েছেন, তারা আগামীকাল গাজায় পৌঁছাবেন বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, “প্রতিটি কিলোমিটার আমাদের জন্য একটি প্রতীকী বিজয়”। বর্তমানে তারা খান ইউনুস থেকে ১৩০ মাইল দূরে অবস্থান করছে, যা প্রায় ২০ থেকে ২২ ঘণ্টার নৌযাত্রা।
ফ্লোটিলার সংগঠকরা জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে’ প্রবেশ করেছে, যা গাজা থেকে ১৫০ নটিক্যাল মাইল (২৭৮ কিমি) দূরে অবস্থিত। এর আগেও এ অঞ্চলে নৌবহরগুলো ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণ বা বাধার সম্মুখীন হয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফ্রান্সেসকা আলবানিজে এবং কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ফ্লোটিলাকে অবাধে এগিয়ে যেতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ফ্রান্সের বামপন্থী দল লা ফ্রঁস ইনসুমিজ–এর সংসদীয় দলনেতা মাথিলদ পানো বলেছেন, ফ্লোটিলায় ৫৫ জন ফরাসি নাগরিক রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬ জন সংসদ সদস্যও আছেন। তিনি তাদের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
ইতালির ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এমপি আরতুরো স্কোত্তো, যিনি বর্তমানে ফ্লোটিলায় আছেন, স্বীকার করেছেন যে তিনি আক্রমণের আশঙ্কা করছেন, তবে মিশন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পেত্রো সতর্ক করে বলেছেন, ফ্লোটিলার উপর হামলা হলে তা হবে “মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ”।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম ইয়েনেট জানিয়েছে, ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারীদের মোকাবেলায় আশদোদ বন্দরে প্রায় ৫০০ পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারক কান দাবি করেছে, ফ্লোটিলার কিছু জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর জাহাজ তাদের নেতৃত্বাধীন দুটি নৌকা আলমা ও সিরিয়াস–কে ঘিরে যোগাযোগ ব্যবস্থা অকার্যকর করে দেয়।
ফ্লোটিলায় মোট ৪৪টি জাহাজ রয়েছে, এর সঙ্গে একটি দেরিতে যোগ দেবে। এর মধ্যে দুটি পর্যবেক্ষণ ও আইনি সহায়তা জাহাজ (শিরিন ও সামারটাইম) ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে পৌঁছালে ফিরে যাওয়ার কথা।
মোট ৪৯৭ জন যাত্রী রয়েছেন, যাদের মধ্যে আছেন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি এনকোসি জওলিভেলিলে ম্যান্ডেলা, এবং বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যরা।
ইতালি ও স্পেন ফ্লোটিলাকে সহায়তার জন্য জাহাজ পাঠিয়েছে, তবে খবর অনুযায়ী ইতালি হয়তো সমর্থন প্রত্যাহার করতে পারে।
তুরস্কের পক্ষ থেকে ড্রোন পাঠানোর কথাও শোনা যাচ্ছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা ও রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে গাজার পথে অগ্রসর হচ্ছে। ইসরায়েলের কঠোর অবস্থান ও সামরিক প্রস্তুতির কারণে পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একাংশ ফ্লোটিলার সুরক্ষার দাবি জানালেও ইসরায়েল তাদের আটকানোর ঘোষণা দিয়েছে।