পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে ফেডারেল কনস্ট্যাবুলারি (এফসি) সদরদপ্তরে বন্দুকধারী ও আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত তিন জন নিরাপত্তা সদস্য নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
সোমবার সকালে হামলাকারীরা প্রথমে সদরদপ্তরের মূল ফটকে আক্রমণ চালায়। ডন পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, একজন আত্মঘাতী হামলাকারী ফটকের কাছে বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণে সেখানে দায়িত্ব পালনরত তিন এফসি সদস্য ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এর পর আরেক আত্মঘাতী হামলাকারী ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে নিরাপত্তাবাহিনী তাকে পার্কিং এলাকার কাছে হত্যা করে।
রয়টার্স জানায়, হামলাটি দুইজন আত্মঘাতী হামলাকারীর সমন্বয়ে পরিচালিত হয়েছিল। বিস্ফোরণের পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে এবং সদরদপ্তরের ভেতরে আরও হামলাকারী লুকিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে।
হামলার ঘটনাস্থলটি পেশোয়ারের একটি জনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং সামরিক ক্যান্টনমেন্টের কাছাকাছি হওয়ায় দ্রুত সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের পরপরই সড়কগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং নিরাপত্তা বাহিনী সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিতে শুরু করে।
এ হামলায় অন্তত ছয় জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের পেশোয়ারের লেডি রিডিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং চিকিৎসকরা জানান, সবাই স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন। ঘটনাটির পর লেডি রিডিং হাসপাতাল ও খাইবার টিচিং হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে পাকিস্তানি তালেবান বা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) অতীতের অনুরূপ হামলাগুলোর জন্য দায়ী হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে জঙ্গি হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইসলামাবাদ ও আফগান তালেবান সরকারের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, টিটিপি আফগানিস্তান থেকে মুক্তভাবে হামলা পরিকল্পনা করছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এফসি সদরদপ্তর লক্ষ্য করে আরও কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটে। সেপ্টেম্বরে বান্নুতে এফসি সদরদপ্তরে হামলায় ছয় সৈন্য নিহত হয় এবং পাঁচজন হামলাকারীকে নিস্তেজ করা হয়। একই মাসে কোয়েটায় এফসি সদরদপ্তরের বাইরে কার বোমা হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হন।
তীব্র নিরাপত্তা পরিস্থিতির মধ্যেই পেশোয়ারের এ হামলা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবিরোধী চ্যালেঞ্জকে আরও স্পষ্ট করে তুলল।



