২০২৬ সালের ২৫তম শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের মশাল প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠান আজ ২৬ নভেম্বর গ্রিসের প্রাচীন অলিম্পিয়া শহরে অনুষ্ঠিত হবে। ইতালির মিলান ও কর্টিনা দ’আম্পেতসোতে ২০২৬ সালের ৬–২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এবারের শীতকালীন অলিম্পিক।
ঐতিহাসিক পটভূমি-
অলিম্পিক শিখা প্রজ্জ্বলনের ইতিহাস প্রাচীন গ্রীসের অলিম্পিক গেমস পর্যন্ত বিস্তৃত। দেবতা প্রমিথিউস মানবজাতিকে আগুন উপহার দেওয়ার পৌরাণিক কাহিনির প্রতীক হিসেবে অলিম্পিক শিখা ব্যবহৃত হতো। প্রাচীন অলিম্পিক চলাকালীন জিউস, হেরা ও হেস্টিয়ার মন্দিরে শিখা জ্বালানো থাকত।
আধুনিক অলিম্পিক শিখা প্রজ্জ্বলন প্রথম চালু হয় ১৯২৮ সালে আমস্টারডামের নবম অলিম্পিকে। আর প্রথম মশাল রিলে অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩৬ সালের বার্লিন অলিম্পিকের পূর্বে, যেখানে ৩,০০০-এর বেশি দৌড়বিদ ৩,০০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেন।
প্রজ্জ্বলন ও রিলে অনুষ্ঠান-
বর্তমান সময়ে গ্রিক পুরোহিতার পোশাক পরিহিত অভিনেত্রীরা সূর্যের রশ্মি কেন্দ্রীভূত করে প্যারাবোলিক আয়নার মাধ্যমে প্রধান মশাল জ্বালান। সম্ভাব্য খারাপ আবহাওয়ার কারণে এ বছর ২৬ নভেম্বরের অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত স্থানে নয়, বরং অলিম্পিয়া প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের ভেতরে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
প্রতি অলিম্পিকের জন্য নতুন নকশার একটি বিশেষ মশাল তৈরি করা হয়, সাধারণত আয়োজকদের দেশের শিল্পী বা ভাস্করদের দ্বারা। রিলে চলাকালে খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ, শিল্পী ও জনসাধারণের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মশাল বহন করেন। দূরপাল্লার যাত্রায় আগুন বিশেষ লণ্ঠনে বিমানে করে পরিবহন করা হয়।
২০১৪ সালের সোচি শীতকালীন অলিম্পিকের সময় রেলে শিখা এলব্রুস পর্বতের চূড়া এবং বাইকাল হ্রদের তলদেশ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। উদ্বোধনী দিনে শিখা অলিম্পিক স্টেডিয়াম বা অন্য কোনো নির্ধারিত স্থানে স্থাপিত কড়াইতে প্রজ্জ্বলিত হয়।
শীতকালীন অলিম্পিকে শিখার যাত্রা-
শীতকালীন অলিম্পিকে প্রথমবার শিখা জ্বালানো হয় ১৯৩৬ সালে জার্মানির গার্মিশ-পার্টেনকির্শেনে। এরপর ১৯৫২ ও ১৯৬০ অলিম্পিকে নরওয়ের মরগেদাল গ্রামে এবং ১৯৫৬ সালে রোমে শিখা জ্বালানো হয়। গ্রিসে শীতকালীন অলিম্পিকের জন্য প্রথমবার আনুষ্ঠানিক প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬৪ সালে, যেখান থেকে বিমানযোগে শিখা ভিয়েনা হয়ে ইনসব্রুকে পৌঁছায়।



