চীন অভিযোগ করেছে যে তাইওয়ান ইস্যুতে জাপানের সাম্প্রতিক মন্তব্য দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সংকটে ঠেলে দিয়েছে। রবিবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির বক্তব্য “বিস্ময়কর” এবং এটি এমন এক “লাল রেখা” অতিক্রম করেছে, যা স্পর্শ করা উচিত নয়।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী ওয়াং ই অভিযোগ করেন, তাকাইচি ৭ নভেম্বর জাপান পার্লামেন্টে এক প্রশ্নের জবাবে ইঙ্গিত দেন যে—চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ চালায়, তবে টোকিও সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। চীনের মতে, এই বক্তব্য সরাসরি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং সামরিক উত্তেজনা বাড়ানোর ইঙ্গিত।
এই মন্তব্যের পর টানা দুই সপ্তাহ ধরে চীন-জাপান সম্পর্ক উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে। পরিস্থিতি বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে। শুক্রবার চীন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করে জানায়, নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বেইজিং “সর্বোচ্চ প্রতিক্রিয়া” দেখাবে।
বেইজিং তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে এবং প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি। তবে তাইওয়ান সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়—তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে দ্বীপের জনগণই।
চীনের অভিযোগের জবাবে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বেইজিংয়ের মন্তব্য “সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য” এবং জাপান শান্তিবাদী নীতিতে অটল রয়েছে। এদিকে, জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে চীনের পাঠানো চিঠিকে তাইওয়ান “অভদ্র, অযৌক্তিক ও ইতিহাস বিকৃতি” বলে আখ্যা দিয়েছে। তারা আরও উল্লেখ করেছে, চিঠির ভাষা জাতিসংঘ সনদের ২(৪) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে, যেখানে শক্তি প্রয়োগের হুমকি নিষিদ্ধ।
ওয়াং ই সতর্ক করে বলেন, জাপান যদি “ভুল পথে” আগায়, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জাপানের অতীত যুদ্ধাপরাধ পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবে। তার দাবি—চীন নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে।
চীন জাপানের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। জাতিসংঘের COMTRADE তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে জাপান চীনে প্রায় ১২৫ বিলিয়ন ডলারের যন্ত্রপাতি, সেমিকন্ডাক্টর ও অটোমোবাইল রপ্তানি করেছে। বর্তমান উত্তেজনা এই বাণিজ্য সম্পর্কেও চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।



