গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নতুন করে চালানো একাধিক বিমান ও ড্রোন হামলায় অন্তত ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশু ও নারীও রয়েছে। ছয় সপ্তাহ ধরে চলমান যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও এই হামলা চালানো হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
শনিবার প্রথম হামলাটি হয় উত্তর গাজা সিটিতে একটি গাড়িতে। এরপর মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ এবং নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে ধারাবাহিক হামলা চালানো হয়। আল-শিফা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রামি মাহান্না জানান, গাজা সিটির রেমাল এলাকায় ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হন।
দেইর আল-বালাহর এক বাসিন্দা জানান, হামলার পর এত বড় বিস্ফোরণ হয় যে আশপাশ এলাকাজুড়ে ধোঁয়া ছেয়ে যায় এবং বাড়ির উপরের তলা ধ্বংস হয়ে যায়। নুসাইরাতে একটি আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে চালানো হামলায়ও বহু মানুষ হতাহত হয়।
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৯৭ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল, যার ফলে ৩৪২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তাদের মতে, এসব হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজা সীমান্তের ভেতর তাদের সৈন্যদের ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতে তারা শনিবারের হামলা চালিয়েছে এবং এতে পাঁচজন সিনিয়র হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে হামাস বলেছে, ইসরায়েল “মিথ্যা অজুহাত” সৃষ্টি করে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারীদের দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল সম্মত সীমার বাইরে সামরিক অগ্রসরতা চালাচ্ছে।
গাজায় হামলার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরেও একই দিনে ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বেড়েছে। প্যালেস্টাইনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাসাফের ইয়াত্তা এলাকায় ফিলিস্তিনি কৃষকদের ওপর বসতি স্থাপনকারীরা হামলা চালায়। হেবরনের দক্ষিণে দাইরায় ইসরায়েলি সেনাদের অভিযানে দুই ফিলিস্তিনি আহত হন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, অক্টোবর মাসে পশ্চিম তীরে ২৬০টি বসতি স্থাপনকারীদের হামলা রেকর্ড করা হয়েছে—যা ২০০৬ সালের পর সর্বোচ্চ। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বলছে, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানচ্যুতি এবং অধিকৃত জমিতে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের শামিল।



