ইসলামাবাদ ও দিল্লি বিস্ফোরণে দুই দেশের উত্তেজনা বৃদ্ধি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সতর্ক করে বলেছেন, ইসলামাবাদ ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে হামলার পর পাকিস্তান প্রয়োজন হলে আফগানিস্তানের ভেতরেও অভিযান চালাতে পারে। মঙ্গলবার রাতে জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যারা আফগান তালেবানের আশ্রয়ে আছে, তারা বারবার আমাদের আক্রমণ করছে।”
আসিফ আরও বলেন, “পাকিস্তান কখনও সামরিক অভিযান শুরু করবে না, কিন্তু কোনো আগ্রাসনকে বিনা জবাবে ছাড়ব না। আমরা শক্তভাবে জবাব দেব।”
ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা আদালতের বাইরে মঙ্গলবারের আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি জানান, হামলাটি দুপুর ১২টা ৩৯ মিনিটে ঘটে এবং এটি একটি আত্মঘাতী আক্রমণ ছিল। ঘটনাটি ঘটে যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছিল, যেখানে সোমবার কেডেট কলেজ ওয়ানায় হামলা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ হামলার জন্য ভারতকে দায়ী করে বলেন, ইসলামাবাদ বিস্ফোরণ ও ওয়ানা হামলা উভয়ই “ভারতীয় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের ঘৃণ্য উদাহরণ।” ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অভিযোগ “অমূলক ও ভিত্তিহীন” বলে প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ইসলামাবাদ তাদের অভ্যন্তরীণ সংকট ঢাকতে এসব দাবি করছে।
অন্যদিকে, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেও সোমবার সন্ধ্যায় রেড ফোর্ট মেট্রো স্টেশনের কাছে গাড়ি বিস্ফোরণে ১৩ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হামলাকারীদের “যে করেই হোক” ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যিনি তখন ভুটানে ছিলেন, ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দেন।
দেশটির শীর্ষ “সন্ত্রাসবিরোধী” সংস্থা তদন্তভার গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে পুরো দিল্লিজুড়ে—বাজার, মেট্রো স্টেশন, রেলওয়ে টার্মিনাল ও বাসস্ট্যান্ডে চলছে তল্লাশি; পাশাপাশি ঘাজিপুর, সিংঘু, টিকরি ও বাদরপুর সীমান্তেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
এদিকে কংগ্রেস নেতা ভি. হনুমন্ত রাও দিল্লি বিস্ফোরণকে “পুরোপুরি গোয়েন্দা ব্যর্থতা” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “এটি দিল্লিতে ঘটেছে, তাহলে অন্য রাজ্যেও ঘটতে পারে। সরকারকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।”
দুই দেশের রাজধানীতে এক দিনের ব্যবধানে ঘটে যাওয়া এই দুটি বিস্ফোরণ দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুন করে উদ্বেগের মুখে ফেলেছে।



