চীনের সিচুয়ান প্রদেশে অবস্থিত দাওচেং ইয়াডিং বিশ্বের অন্যতম সুন্দর প্রাকৃতিক সংরক্ষিত অঞ্চল, যা অনেকে ব্রিটিশ লেখক জেমস হিল্টনের ১৯৩৩ সালের উপন্যাস লস্ট হরাইজনে বর্ণিত একটি কাল্পনিক স্থান, একটি রহস্যময় এবং সুরেলা উপত্যকা “শাংরি-লার” সাথে তুলনা করেন। নির্মল হাওয়া, তুষারাবৃত পাহাড়, নীলচে হ্রদ, রঙিন বন আর তিব্বতি সংস্কৃতির মিশেলে গঠিত এই সংরক্ষিত এলাকা প্রকৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের অনন্য সমন্বয়।
এখানকার মূল আকর্ষণ তিনটি তিব্বতি পবিত্র পর্বত হচ্ছে মাউন্ট চেনরেজিগ (Xiannairi) ‘করুণা’র প্রতীক, মাউন্ট জ্যামবেয়াং (Yangmaiyong) ‘জ্ঞান’-এর প্রতীক, মাউন্ট চানাডোরজি (Xianuoduoji) শক্তি ও ক্রোধের প্রতীক হিসেবে পূজিত।
এ ছাড়া মিল্ক লেক, ফাইভ-কালার লেক ও পার্ল লেক-এর নীলচে-সাদা জলরাশি এবং লুোরং প্যাস্টারের বিস্তীর্ণ তৃণভূমির সাথে এলাকায় অবস্থিত চংগু মঠ ও বহু প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা পর্যটকদের জন্য অপরিসীম আকর্ষণ। ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি দাওচেং ইয়াডিং ভ্রমণের সেরা সময়। এ সময় তাপমাত্রা তুলনামূলক ঠান্ডা, আকাশ পরিষ্কার থাকায় তুষারচূড়া ও হ্রদের প্রতিফলন স্পষ্ট দেখা যায়। পাহাড়ি বনজুড়ে দেখা যায় সোনালি, লাল আর কমলার মিশ্র রঙিন পাতা। বসন্তে (মার্চ–জুন) পাহাড়ি ফুলে সাজে পুরো এলাকা, গ্রীষ্মে (জুলাই–আগস্ট) থাকে বর্ষাকাল, আর শীতে (নভেম্বর–মার্চ) তুষারপাতের কারণে অনেক পথ বন্ধ থাকে।
চেংদু থেকে বিমানযোগে দাওচেং ইয়াডিং বিমানবন্দর হয়ে রিওয়া টাউনের মাধ্যমে পার্কে প্রবেশ করতে হয়। উচ্চতা ৪,০০০ মিটারের বেশি হওয়ায় পর্যটকদের অভিযোজন ও অক্সিজেন প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
রঙিন শরতের বন, তুষারচূড়ার প্রতিফলিত হ্রদ আর তিব্বতি সংস্কৃতির মিশ্রণে দাওচেং ইয়াডিং যেন প্রকৃত অর্থেই স্বপ্নের “শেষ শাংরি-লা”।



