ইতিহাস গড়ার পথে জোহরান মামদানি, ভোটের আগের রাতে সমর্থকদের উদ্দীপিত আহ্বান।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের আগের রাতে ইতিহাস গড়ার আহ্বান জানালেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জোহরান ক্বামি মামদানি। কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়া এলাকায় সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই হাতগুলোই আজ আমাদের ইতিহাস তৈরির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে—যখন আমরা শ্রমজীবী মানুষের জন্য লড়ি, তখন রাজনীতির চেহারা বদলানো সম্ভব।”
৩৪ বছর বয়সী মামদানি সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর শেষ নির্বাচনী সভায় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ও গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দেন। তিনি তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “পুরোটা দিয়ে দাও—এটাই ইতিহাসের মুহূর্ত।”
একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে সমর্থন জানান। ট্রাম্প বলেন, নিউইয়র্কবাসী যেন “খারাপ ডেমোক্র্যাট” কুয়োমোকেই ভোট দেয় “কমিউনিস্ট” মামদানির বদলে। পরে বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কও কুয়োমোর পক্ষে অবস্থান নেন।
তবে সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, মামদানি এখনো এগিয়ে আছেন, যদিও ব্যবধান কিছুটা কমেছে। সমর্থকদের মতে, তাঁর প্রচারণা ঐতিহ্যবাহী দাতা-নির্ভর ডেমোক্র্যাটিক রাজনীতির বিরুদ্ধে এক সাহসী প্রতিবাদ। যদি নির্বাচিত হন, মামদানি হবেন নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম, প্রথম দক্ষিণ এশীয় এবং আফ্রিকাজনিত বংশোদ্ভূত মেয়র।
অন্যদিকে কুয়োমো শেষ মুহূর্তে শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালিয়ে বলেন, মামদানির ‘সমাজতান্ত্রিক’ নীতি নিউইয়র্ককে বিপর্যয়ের পথে নিয়ে যাবে। তিনি ট্রাম্পের সমর্থনের প্রসঙ্গে বলেন, “আমি একজন গর্বিত ডেমোক্র্যাট, তবে আমাদের শহরে সমাজতন্ত্রের জায়গা নেই।”
নির্বাচনের আগেই ৭ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে, এবং ফলাফল ঘোষণা হওয়ার কথা রাতেই।
জোহরান মামদানি উগান্ডার কাম্পালায় জন্মগ্রহণ করেন এক উগান্ডা-ভারতীয় পিতা ও ভারতীয় মাতার পরিবারে। তিনি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাহমুদ মামদানি ও অস্কার-মনোনীত চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ারের সন্তান। তার বাবা ঔপনিবেশিকতা ও সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে গবেষণার জন্য খ্যাত, আর মা জাতি, লিঙ্গ ও শ্রেণি বিষয়ক চলচ্চিত্রের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সাত বছর বয়সে পরিবারসহ তিনি নিউ ইয়র্কে চলে যান। ব্যাংক স্ট্রিট স্কুল ও ব্রঙ্কস সায়েন্স স্কুলে পড়াশোনার সময় থেকেই রাজনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি আগ্রহ দেখান। আফ্রিকা, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা তার দৃষ্টিভঙ্গিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।



