গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েলি ড্রোন, গোলাবর্ষণ ও বিস্ফোরণের শব্দে ফিলিস্তিনিরা গভীর মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছে। আজ দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের কাছে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
ইস্তাম্বুল সাবাহাত্তিন যায়িম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামি আল-আরিয়ান অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধবিরতির পর গাজায় প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশের কথা থাকলেও বাস্তবে তার অল্প অংশই পৌঁছাচ্ছে।
তিনি বলেন, “যুদ্ধবিরতির সব শর্তই লঙ্ঘিত হয়েছে। প্রতিশ্রুত ত্রাণ, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কিছুই আসছে না। ক্ষুধাকে এখনো ইসরায়েল তার নীতির অংশ হিসেবে ব্যবহার করছে।”
ইসরায়েলি সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ জানায়, হামাস যে দেহাবশেষ হস্তান্তর করেছে, তা এখনো গাজায় আটক থাকা ১৩ ইসরায়েলি বন্দির কারো নয়। টেল আভিভের ফরেনসিক ইনস্টিটিউটের পরীক্ষায় দেখা গেছে, এটি পূর্বে দাফন করা এক ব্যক্তির দেহাবশেষ। এদিকে হামাস জানায়, তারা এখন পর্যন্ত ১৬ ইসরায়েলি বন্দির দেহ হস্তান্তর করেছে এবং মিশরীয় দলের সহায়তায় আরও ১২ জনের দেহ অনুসন্ধান চলছে।
যুদ্ধবিরতির মাঝেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহর, বুরেইজ শরণার্থী শিবির ও রাফাহ সংলগ্ন মোরাগ করিডর এলাকায় বোমাবর্ষণ করেছে বলে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে। এসব হামলায় একাধিক ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।
ওয়াফা সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয় ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযান চালানো হয় রামাল্লাহ, নাবলুস ও আশপাশের কয়েকটি শরণার্থী শিবিরে। অন্যদিকে জর্ডান উপত্যকায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনি কৃষকদের সেচব্যবস্থা ও ফসল ধ্বংস করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিম তীরে সাত হাজারেরও বেশি এমন হামলা চালানো হয়েছে।
গাজা শহরের আকাশে সারাদিন ড্রোনের আওয়াজে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। অনেকে জানান, শিশুদের রাতে ঘুম ভেঙে যায়, তারা মনে করে নতুন করে বিমান হামলা শুরু হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্করাও সামান্য শব্দে ভয়ে কেঁপে ওঠেন। দুই বছরের অব্যাহত বোমাবর্ষণের ফলে ড্রোনের শব্দ এখন গাজার মানুষের কাছে এক স্থায়ী আতঙ্কের প্রতীক হয়ে উঠেছে।



