একটি ভিন্ন নক্ষত্রমণ্ডল থেকে আগত ধূমকেতু ৩আই/অ্যাটলাস (3I/Atlas) গত শুক্রবার মঙ্গল (Mars) গ্রহের কাছ দিয়ে অতিক্রম করেছে। পৃথিবীসহ সৌরজগতের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মহাকাশযানগুলো এই বিরল আন্তঃনাক্ষত্রিক অতিথির গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।
এই ধূমকেতুটি মঙ্গল গ্রহের প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মাইল (২ কোটি ৯০ লাখ কিলোমিটার) দূর দিয়ে অতিক্রম করেছে, যা তার অভ্যন্তরীণ সৌরজগত ভ্রমণের সবচেয়ে নিকটতম বিন্দু। এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১ লক্ষ ৯৩ হাজার মাইল (৩ লক্ষ ১০ হাজার কিলোমিটার)—অবিশ্বাস্য দ্রুতগতি।
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ESA)-এর দুইটি স্যাটেলাইট ইতিমধ্যেই মঙ্গলের কক্ষপথ থেকে ধূমকেতুটির দিকে ক্যামেরা তাক করেছিল। পাশাপাশি, নাসার স্যাটেলাইট ও রোভারগুলোও পর্যবেক্ষণে অংশ নিয়েছিল। এটি এখন পর্যন্ত মানুষের জানা মাত্র তৃতীয় আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু, যা আমাদের সৌরজগতের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করেছে।
গত জুলাইয়ে আবিষ্কৃত এই ধূমকেতুটি পৃথিবী বা অন্য কোনো গ্রহের জন্য কোনো হুমকি নয়। এটি আগামী অক্টোবরের শেষে সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছাবে, এবং নভেম্বর মাসজুড়ে ইউরোপীয় মহাকাশযান Juice, যা বৃহস্পতি ও তার বরফে ঢাকা উপগ্রহগুলোর পথে রয়েছে, সেটিও ধূমকেতুটির ওপর নজর রাখবে।
ডিসেম্বরে এটি পৃথিবীর কাছ দিয়ে যাবে, তখন এর দূরত্ব হবে প্রায় ১৬ কোটি ৭০ লাখ মাইল (২৬ কোটি ৯০ লাখ কিলোমিটার)।
নাসা ও হাবল স্পেস টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ধূমকেতুর কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াসের আকার সর্বোচ্চ ৩.৫ মাইল (৫.৬ কিলোমিটার) হতে পারে, তবে এটি মাত্র ৪৪০ মিটার ছোটও হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতুর অধ্যয়ন আমাদের সৌরজগতের বাইরের জগত সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে—যা মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।