মাদাগাস্কার গত ২ সেপ্টেম্বর এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফ্রান্স থেকে ফেরত আসা তিনটি খুলি গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে একটি খুলি বিশ্বাস করা হচ্ছে সাকালাভা জনগোষ্ঠীর সাবেক রাজা তোয়েরার, যাকে ১৮৯৭ সালে ফরাসি সেনারা শিরশ্ছেদ করেছিল। বাকি দুটি খুলি তার দুই যোদ্ধার বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফ্রান্স গত ২৭ আগস্ট প্যারিসে আনুষ্ঠানিকভাবে এই খুলিগুলো হস্তান্তর করে। দেশটি সম্প্রতি একটি আইন (২০২৩) পাস করেছে, যার মাধ্যমে ঔপনিবেশিক যুগে লুণ্ঠিত মানব দেহাবশেষ ফেরত দেওয়া সহজ হয়েছে।
খুলিগুলো গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে মাদাগাস্কারে পৌঁছালে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিহিত সাকালাভা সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিমানবন্দরে সেগুলো গ্রহণ করে। পরদিন রাজধানী আন্তানানারিভোতে পতাকায় মোড়ানো তিনটি বাক্স শহরের সমাধিক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে রাষ্ট্রপতি আন্দ্রি রাজোয়েলিনা ও সরকারি ও সাকালাভা প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি রাজোয়েলিনা বলেন, “অতীত ও ইতিহাস জানা ছাড়া আমরা সামনে এগোতে পারব না। আমরা গর্বিত যে আমাদের এমন একজন রাজা ও সৈন্য ছিলেন, যারা সাহসিকতার সঙ্গে ফরাসি ঔপনিবেশিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।”
সাকালাভাদের নবনিযুক্ত রাজা জর্জেস হারেয়া কামামি, রাজা তোয়েরার প্রপৌত্র, তার পূর্বপুরুষকে স্বাগত জানাতে পবিত্র সিসিরিবিহিনা নদীর জল ছিটিয়ে দেন। তিনি বলেন, “আজ আমাদের জন্য আনন্দের দিন। তবে দুঃখের বিষয়, খুলিগুলো সরাসরি রাজপরিবারের হাতে দেওয়া হয়নি।”
ফেরত আসা খুলিগুলো ৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় মেনাবে এলাকায় নেওয়া হয়। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের শেষেই সেগুলো দাফন করা হয়। রাজার খুলি তার দেহাবশেষের সঙ্গে পুনরায় যোগ হয় আমবিকি শহরের সমাধিতে, যেখানে তিনি নিহত হয়েছিলেন।
১৮৯৭ সালের আমবিকি গণহত্যার পর ফরাসি সেনারা খুলিগুলো যুদ্ধলব্ধ ট্রফি হিসেবে নিয়ে যায় এবং প্যারিসের জাতীয় ইতিহাস জাদুঘরে সংরক্ষণ করে। মাদাগাস্কার ১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রান্স তার ঔপনিবেশিক যুগে লুণ্ঠিত বিভিন্ন প্রত্নবস্তু ও দেহাবশেষ ফেরত দিচ্ছে। তবে প্রতিবারই বিশেষ আইন পাসের প্রয়োজন হতো। ২০২৩ সালের নতুন আইনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে।