ইসরায়েলে ১ লক্ষ বছরের পুরনো সমাধিক্ষেত্র মানব ইতিহাসে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।
ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের টিনশেমেত গুহায় প্রত্নতত্ত্ববিদরা আবিষ্কার করেছেন প্রায় ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার বছর আগের একাধিক মানবদেহের অবশেষ, যা বিশ্বের প্রাচীনতম সমাধিক্ষেত্রগুলোর অন্যতম বলে মনে করা হচ্ছে। এই আবিষ্কার প্রাচীন মানুষের আচার-অনুষ্ঠান, সামাজিক বন্ধন ও আধ্যাত্মিক চিন্তার বিকাশ সম্পর্কে নতুন ধারণা দিচ্ছে।
গুহাটিতে পাঁচজন প্রাচীন মানুষের কঙ্কাল পাওয়া গেছে, যার মধ্যে দুটি পূর্ণ কঙ্কাল এবং তিনটি বিচ্ছিন্ন খুলি ছিল অন্যান্য হাড় ও দাঁত সহ। তাদের সঙ্গে পাওয়া গেছে লাল ও কমলা রঙের খনিজ পদার্থ, যেগুলো দৈনন্দিন জীবনের কাজে ব্যবহৃত হত না। গবেষকদের ধারণা, এগুলো মৃতদের সম্মান জানাতে বা ধর্মীয় আচারে ব্যবহৃত হতো।
গবেষণাটি ২০২৫ সালের মার্চে Nature Human Behavior জার্নালে প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, টিনশেমেত গুহার জলবায়ু ও আগুনের ছাইয়ের মিশ্রণে দেহ ও বস্তুগুলো দীর্ঘদিন সংরক্ষিত ছিল। এক কঙ্কাল এতটাই ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিল যে তার হাতের আঙুলের ভাঁজ পর্যন্ত দৃশ্যমান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, টিনশেমেতের আবিষ্কার পূর্বে উত্তর ইসরায়েলের স্কুল ও কাফজেহ গুহার আবিষ্কারের সঙ্গে মিল রয়েছে। এসব প্রমাণ একত্রে ইঙ্গিত দেয়, প্রায় এক লক্ষ বছর আগে থেকেই মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে কবর দেওয়ার প্রথা শুরু করেছিল।
গবেষকেরা আরও মনে করেন, প্রাচীন ইসরায়েল ছিল আফ্রিকা থেকে আগত হোমো সেপিয়েন্স ও ইউরোপীয় নেয়ান্ডারথালদের মিলনস্থল। এই অঞ্চলেই তারা সংস্কৃতি, কৌশল ও পরিচয়ের বিনিময় করেছিল। এই আবিষ্কার তাই শুধু প্রাচীন সমাধি নয়—এটি মানবজাতির প্রথম আধ্যাত্মিক চিন্তা ও সামাজিক সংগঠনের সূচনার এক অনন্য প্রমাণ।



